মানুষের মারামারি দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। রাস্তায় মারামারি লেগেছে কিংবা মারামারি লাগার সম্ভাবনা আছে, এমন দেখলেই দাঁড়িয়ে যাই। আজকেও এমন দৃশ্য সামনে পরলো। তাই তাড়া থাকা সত্বেও দাঁড়িয়ে গেলাম।
অটোওয়ালা একজন পথচারীর গায়ে লাগায়া দিছে। দুইজনই মারমুখী পজিশনে। কেউ কারো দোষ স্বীকার করতে রাজি না। তবে আমার ধারণা অটোওয়ালারই দোষ। কারণ এখানকার অটোওয়ালাদের আমার মানুষের বাচ্চা মনে হয়না।
পনেরো-বিশ ফিট দূরে দাঁড়িয়ে পছন্দের দৃশ্য উপভোগ করছি। এরমধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে গেছে। টানটান উত্তেজনা। মারাত্মক পর্যায়ে মারামারি হচ্ছেনা কিছু আউট লোকের কারণে। এই লোকগুলাকে আমি তীব্র ঘৃণার চোখে দেখি। এরা ঝামেলার আগেও থাকেনা, পরেও থাকেনা। মাঝখানে ঢুকে দুই দলকেই শান্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। মনে হয় রাস্তায় যারা ঝামেলা করতেছে, তারা তাদের বাপ-ভাই লাগে; না থামালে অন্যায় হয়ে যাবে।
এমন অবস্থায় একজন লোক এসে, কিছুটা বিস্ময়ের সাথে বললো--
: ভাই আপনি এখানে? আমাকে চিনতে পারছেন?
মনোযোগ পুরোপুরি মারামারিতেই ছিলো। চোখ ঘুরিয়ে যে লোকটাকে দেখলাম, তাকে আমি চিনতে পারলাম না। লোকটার সাথে তার স্ত্রী এবং স্ত্রীর কোলে ছোট বাচ্চা। চিনতে না পারায় কিছুটা লজ্জিত হয়ে জবাব দিলাম--
: না ভাই, চিনতে পারলাম না। কে আপনি?
: ভাই, আমার ওয়াইফের সিজারের সময় রক্ত পাইতেছিলাম না। আপনি আমার ওয়াইফকে এক ব্যাগ রক্ত দিছিলেন...
লোকটা কথাগুলো খুব বিনয়ের সাথে বলছিলো। ওই সময়ের অনুভূতি পৃথিবীর সকল অনুভূতির থেকে আলাদা। তাকে চিনতে না পারার কারণ হচ্ছে, আমি রক্ত দিতে গিয়েছিলাম অন্য আরেকজনের রেফারেন্সে।
লোকটা চলে গেলো। আমি হাঁটতে থাকলাম। ঝগড়া থেমে গেছে। মনে মনে ভাবছি, আমি এখানে কেনো দাঁড়িয়ে ছিলাম, লোকটা জানলে হয়তো বিনয়ের বদলে বলতো ‘আমি আপনারে ভালো জানতাম’...
আমিও আমারে ভালোই পাইতাম।
গতোকালকে প্লাস্টিক সম্পর্কিত একটা প্রতিবেদন দেখলাম এবং আজকে একটা নিউজ পড়লাম। দুইটা জিনিস দেখে এবং পরে আমি জাস্ট ঘাবড়ে গেলাম। আমরা মানবজাতি কতোটা হুমকি স্বরূপ নিজেদের জন্য, এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর জন্য... আমরা একটা পলিথিন বা প্লাস্টিকের বোতল খুব তুচ্ছ মনে করে যেখানে সেখানে ফেলে দিচ্ছি। এই প্লাস্টিকগুলো কি হচ্ছে? কোথায় যাচ্ছে? এসব কি কিছুর খবর জানি আমরা? এই প্লাস্টিক প্রথমে কোন খাল বা ড্রেন ধরে চলে যাচ্ছে নদীতে, নদী থেকে সমুদ্রে। আমাদের ব্যবহৃত প্রায় নব্বই শতাংশ প্লাস্টিকের সর্বশেষ ঠিকানা হচ্ছে সমুদ্র। যার কারণে সমুদ্রের প্রাণীগুলোর হচ্ছে অকালমৃত্যু। এই পর্যন্ত তাও ঠিক ছিলো। কিন্তু এই মানুষের ফালানো প্লাস্টিক যখন মানুষের জন্যই হুমকি হচ্ছে যাচ্ছে, তখন তো ঘাবড়ে যাবারই কথা... একটি মার্কিন সংস্থা চেষ্টা চালিয়েছিলো যে সমুদ্র থেকে ৮০ শতাংশ প্লাস্টিক তারা সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- সমুদ্রের চাপে বা বিভিন্ন সময়ে প্লাস্টিক হয়ে যাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। মাইক্রোপ্লাস্টিক হচ্ছে, প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা। যা সমুদ্র কিংবা নদী থেকে সরিয়ে ফেলা অসম্ভব। আর দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে ...
Comments
Post a Comment