এক সপ্তাহ ধরে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল চালাবো না। কারণ এই যন্ত্রটা আমার সময় খেয়ে ফেলছে।
প্রথমে চিন্তা করেছিলাম মোবাইলই চালাবো না। ফিরে যাবো সেই পুরনো দিনে। যখন মোবাইল ছিলো না। যখন নিজের জন্য সময় ছিলো অফুরন্ত।
কিন্তু মোবাইল আমাদের জীবনে এমন ভাবে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে যে, মোবাইল ছাড়া জীবন প্রায় অচল। তাই সবকিছু বিবেচনা করে চিন্তা করলাম অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার না করি। নরমাল বাটন সেট ব্যবহার করি।
তারপর আবারও ভাবতে শুরু করলাম। যদি অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার না করি, তাহলে কি কি উপকার হবে? আর কি কি মিস করবো বা অপকার হবে?
ভাবতে ভাবতে কিছু প্রশ্নের উত্তর আমি নিজেই নিজেকে দিয়েছি।
অ্যান্ড্রোয়েড ফোন না চালালে হয়তো নিজেকে বেশি সময় দিতে পারবো। বিনোদনের জন্য বাস্তব জীবনে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। খারাপ ভিডিও, ছবি, পর্ণ এসব থেকে দূরে থাকতে পারবো। প্রচুর বই পড়া হবে...
কিন্তু যদি অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার না করি, তবে অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। অনেক মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি হবে না।
এই অ্যান্ড্রোয়েড, ইন্টারনেট বা ফেসবুকের বদৌলতে অনেক মানুষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, যারা বাস্তব জীবনে পরিচয় হওয়া মানুষদের থেকেও বেশি।
যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তবে ভবিষ্যতেও এমন অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হবে। আবার ইন্টারেনেট ব্যবহার না করলে, এতোদিনে যাদের সাথে পরিচয় হয়েছে তাদেরকেও তো মিস করবো।
এছাড়া পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের খবর খুব দ্রুত জানা যায় এই যন্ত্রটার সাহায্যে। অনেক অজানা জিনিস জেনেছি এই যন্ত্রটার সাহায্যে। ইন্টারনেট না থাকলে হয়তো যেগুলো জানা কখনোই সম্ভব হতো না।
আবার ভাবি নুসরাতের সস্তানের বাবা কে? অপূর্ব করলো তিন নাম্বার বিয়ে। মাহির ‘খানকির পোলা জোড়ে দে’ টাইপ জিনিসগুলো জেনে আমার কি লাভ। বিল গেটস্ এর এতো টাকা থাকার পরেও তার সংসার ভাংছে। তাতে আমার কি? এগুলা দিয়ে আমার জীবনে কি উন্নতি হবে?
আবার ইন্টারনেট ব্যবহার না করলে- চে গুয়েভারাকে জানাই হতো না। আহমদ ছফাকে চেনাই হতো না। কিংবা এমন আরও অনেক নাম...
আচ্ছা কেউ কি বলতে পারেন অ্যান্ড্রোয়েড ফোন ব্যবহার না করে, পৃথিবীর টুকিটাকি খবরা খবর পাওয়া যাবে কিভাবে?
গতোকালকে প্লাস্টিক সম্পর্কিত একটা প্রতিবেদন দেখলাম এবং আজকে একটা নিউজ পড়লাম। দুইটা জিনিস দেখে এবং পরে আমি জাস্ট ঘাবড়ে গেলাম। আমরা মানবজাতি কতোটা হুমকি স্বরূপ নিজেদের জন্য, এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর জন্য... আমরা একটা পলিথিন বা প্লাস্টিকের বোতল খুব তুচ্ছ মনে করে যেখানে সেখানে ফেলে দিচ্ছি। এই প্লাস্টিকগুলো কি হচ্ছে? কোথায় যাচ্ছে? এসব কি কিছুর খবর জানি আমরা? এই প্লাস্টিক প্রথমে কোন খাল বা ড্রেন ধরে চলে যাচ্ছে নদীতে, নদী থেকে সমুদ্রে। আমাদের ব্যবহৃত প্রায় নব্বই শতাংশ প্লাস্টিকের সর্বশেষ ঠিকানা হচ্ছে সমুদ্র। যার কারণে সমুদ্রের প্রাণীগুলোর হচ্ছে অকালমৃত্যু। এই পর্যন্ত তাও ঠিক ছিলো। কিন্তু এই মানুষের ফালানো প্লাস্টিক যখন মানুষের জন্যই হুমকি হচ্ছে যাচ্ছে, তখন তো ঘাবড়ে যাবারই কথা... একটি মার্কিন সংস্থা চেষ্টা চালিয়েছিলো যে সমুদ্র থেকে ৮০ শতাংশ প্লাস্টিক তারা সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে- সমুদ্রের চাপে বা বিভিন্ন সময়ে প্লাস্টিক হয়ে যাচ্ছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। মাইক্রোপ্লাস্টিক হচ্ছে, প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা। যা সমুদ্র কিংবা নদী থেকে সরিয়ে ফেলা অসম্ভব। আর দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে ...
Comments
Post a Comment