সমালোচনা যেনো পিছু ছাড়ছে না কবি নির্মলেন্দু গুণের। পরী মণি এবং আওয়ামিলীগের কবি নিয়ে সমালোচনা শেষ হতে না হতে এখন সমালোচনা হচ্ছে মা কে নিয়ে করা তার একটা স্ট্যাটাস নিয়ে।
প্রথমেই বলি পরী মণিকে নিয়ে করা মন্তব্য নিয়ে...
পরী মণির অভিনয় আমার নিজের কাছেও ভালো লাগে না। যাকে বলে জঘন্য। কিন্তু তার মতো রিয়েল বিউটি কয়জন আছে বাংলা চলচ্চিত্রে? আমার কাছে তো ঐশ্বরিয়া রায়ের চেয়ে পরী মণিকে বেশি ভালো লাগে। নির্মলেন্দু গুণের কথা বাদ’ই দিলাম। বাকি আট মিলিয়ন ফলোয়ার তার পেজে কি ওয়াজ শুনতে লাইক দিয়ে রেখেছে ?
নির্মলেন্দু গুণ আওয়ামিলীগের কবি বলাতে যারা চটেছেন, তারা আদৌও কি নির্মলেন্দু গুণ সম্পর্কে জানেন? তার বই পড়া তো দূরের কথা, তার বইয়ের নামগুলো জানেন? নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধুর একজন অন্ধ ভক্ত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা তাঁর অসংখ্য কবিতা আছে। তিনি মূলত মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এসব বিষয়েই বেশি কবিতা লিখেছেন। আর কিছু কবিতা আছে প্রেম, কাম এই বিষয়ে...
আমার মনে হয় তাঁর কবি জীবনের পচাশি শতাংশ খরচ করেছেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখে, ভালোবেসে৷ বিনিময়ে তিনি আওয়ামিলীগ থেকে পেয়েছেন ও অনেক। এইতো কিছুদিন আগেও নির্মলেন্দু গুণের মেয়ে মৃত্তিকা গুণ সিনেমা বানালো, সরকারি অনুদানে। অনেক বড় বড় পুরষ্কারও পেয়েছেন তিনি এই সরকারেরই আমলে...
স্বাভাবিক ভাবেই তিনি যা পেয়েছেন, যা করেছেন সেসব স্বীকার করেছেন। আমি তাঁর পোস্ট টা পড়েছি। কই, কোন দলকে তো তিনি ছোট করেন নাই। জাফর ইকবালের মতো মিথ্যে চেতনা দেখান নাই। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, রাজাকার এইসব বিষয়ে ব্যবসা করেন নাই।
আমাদের সমস্যাটা হচ্ছে আওয়ামিলীগে। এইতো কিছুদিন আগে আমরা মাশরাফিকেও গালাগালি করছি। এখন আবার আগের মতোই তাঁকে বাহবা দিচ্ছি। আমরা ভালো রাজনীতি চাই, কিন্তু ভালো মানুষ রাজনীতিতে আসুক সেটা চাই না। ভালো ব্যক্তিত্ব রাজনীতিতে থাকুক সেটা চাই না।
তাঁর সর্বশেষ যে পোস্টটি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে, সেটা ‘মা’ কে নিয়ে লেখা একটা পোস্ট। পোস্টটি ছিলো এমন ‘যাঁরা আমাদের মা হয়েছেন, প্রাকৃতিক কারণেই তাঁরা আমাদের ‘মা’ হয়েছেন। তাই আমি ‘মা’ দের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা বোধ করি না’।
এই সেইম কথা বলতে গিয়ে একদিন বন্ধু আজিজের সাথে অনেক তর্ক হইছিলো। দশমাস দশদিন পেটে রাখার যন্ত্রণা, দুধের ঋণ ইত্যাদি বিষয়গুলো শুধুই আবেগ। কারণ সব প্রাণীই মা হয়। আর এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। এখানে বিশেষ কোন কিছু নেই। আর সন্তান জন্ম না দিলে একটা মেয়ের জীবন কখনোই পরিপূর্ণ হয়না। নিজেকে পরিপূর্ণ করার জন্য হলেও সন্তান জন্ম দিয়ে মা হওয়া দরকার...
বরং আমি মাকে সম্মান করি আমার জন্মের পরের কাজ গুলোর জন্য। আমাকে সময় মতো খাওয়ানো। আমার নোংরা করা কাপড় ধুয়ে দেয়া। আমার অবুঝ অত্যাচার সহ্য করা। আমার অসুখে রাত জেগে সেবা করা। কোন স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসার জন্য। আর এই জিনিসগুলো যদি আমার জন্মদাত্রী মা না করে অন্য কেউ করতো বা অন্য কোন প্রাণী করতো, তাকেই আমি ঈশ্বরের পরের আসনে বসাতাম...
সবশেষে, মানুষের ভুল হতেই পারে। কিন্তু তিনি কবি হলেও ব্যক্তিগতো একটা জীবন আছে। ব্যক্তিগতো পছন্দ আছে।
Comments
Post a Comment